জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প উভয়েই নিজ নিজ অবস্থান থেকে কথা বলেছেন, তবে তাদের কার্যক্রম এবং প্রতিক্রিয়া ছিল ভিন্ন। ড. ইউনূস মূলত আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও সামাজিক ব্যবসার ওপর জোর দিয়েছেন, আর ট্রাম্প জাতিসংঘকে অকার্যকর বলে সমালোচনা করেছেন।
ডক্টর ইউনুস এর কার্যক্রম
ড. ইউনূস, যিনি বর্তমানে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশন চলাকালে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন এবং বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তার প্রধান আলোচ্য বিষয় ছিল সামাজিক ব্যবসা, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি এবং মাতৃস্বাস্থ্য। তিনি বিশেষ করে গ্রামীণ মহিলাদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা উন্নত করতে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার এবং গর্ভাবস্থায় ঋণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। ড. ইউনূস বৈশ্বিক ওষুধ শিল্পের সংস্কার করে সামাজিক ব্যবসায়িক মডেলের অধীনে টিকা উৎপাদনের আহ্বান জানান, যেন তা সবার জন্য সাশ্রয়ী হয়। তিনি অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুসের মতো ব্যক্তিত্বদের সঙ্গেও বৈঠক করেন। এই সফরে তিনি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পরিকল্পনা ও আসন্ন নির্বাচন নিয়েও বিশ্বকে অবহিত করার চেষ্টা করেছেন।
ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া
অন্যদিকে, ডোনাল্ড ট্রাম্প তার বক্তব্যে জাতিসংঘকে তীব্রভাবে আক্রমণ করেছেন। তিনি দাবি করেন যে জাতিসংঘ শুধু শক্তিশালী বিবৃতি দেয়, কিন্তু বিশ্বব্যাপী যুদ্ধ বন্ধে কোনো কার্যকর ভূমিকা রাখে না। ট্রাম্প বলেন, জাতিসংঘকে যা করার কথা ছিল, তা তাকেই করতে হচ্ছে। তার বক্তৃতায় তিনি জাতিসংঘ সদর দপ্তরের "খারাপ চলন্ত সিঁড়ি" এবং "টেলিপ্রম্পটার" নিয়েও অভিযোগ করেন। ট্রাম্প জলবায়ু পরিবর্তন প্রতিরোধের প্রচেষ্টাকে "বিশ্বের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রতারণা" বলে অভিহিত করেন এবং অভিবাসনের মাধ্যমে পশ্চিমা দেশগুলোর ওপর "আক্রমণ" বাড়ানোর জন্য জাতিসংঘকে দায়ী করেন। তার এই বক্তব্য ড. ইউনূসের কার্যক্রমের চেয়ে ভিন্ন ছিল, কারণ ট্রাম্প মূলত জাতিসংঘের কাঠামোগত এবং রাজনৈতিক ব্যর্থতা নিয়ে কথা বলেছেন, কোনো নির্দিষ্ট সামাজিক বা অর্থনৈতিক উদ্যোগ নিয়ে নয়।
Post a Comment