উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই বিমানে সমস্যা আঁচ করেন পাইলট, জানিয়েছিলেন কন্ট্রোল রুমেও

 

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৯ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়াও দুর্ঘটনায় শতাধিক আহত হয়েছেন। জানা গেছে, সোমবার (২১ জুলাই) বিমানটির পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম সাগরের সলো ফ্লাইট ট্রেনিং। উড়ালের কিছুক্ষণের মধ্যেই বিমানে সমস্যা আঁচ করেন তিনি । বিষয়টি তিনি জানিয়েছেন কন্ট্রোল রুমেও।জানা গেছে, সলো ফ্লাইট ট্রেনিং হলো একজন পাইলটের ট্রেনিংয়ের সর্বশেষ ধাপ। ফাইটার জেট অপারেট করার জন্য একজন পাইলট যে হাই স্কিল্ড, সেটি’ই প্রমাণিত হয় সোলো ফ্লাইটের মাধ্যমে। ট্রেনিংয়ের এপর্যায়ে পাইলটকে নেভিগেটর বা কো-পাইলট বা কোনো প্রকার ইন্সট্রাক্টর ব্যতীত একাই ফ্লাইট অপারেট করতে হয়। ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির আজ সেরকমই একটি ট্রেনিং ফ্লাইট অপারেট করছিলেন।বিশেষজ্ঞরা জানান, যেকোনো প্রকার ট্রেনিং ফ্লাইট সিভিলিয়ান এরিয়া থেকে দূরেই হয়ে থাকে, তবে সলো ফ্লাইট সাধারণত আর্বান এরিয়াতেই হয়ে থাকে৷ আর আর্বান এরিয়াতে এ ধরণের সেন্সিটিভ ফ্লাইট অপারেট করার জন্য পাইলটকে যথেষ্ট কোয়ালিফাইড হতে হয়। ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির তেমনই একজন পাইলট। ট্রেনিংয়ের লক্ষ্যে তৌকির তার এফ-৭ বিমান নিয়ে কুর্মিটোলা পুরাতন এয়ারফোর্স বেস থেকে টেক অফ করেন। এরপর উত্তরা, দিয়াবাড়ি, বাড্ডা, হাতিরঝিল, রামপুরা’র আকাশজুড়ে তিনি উড়তে থাকেন।তারা আরও জানান, তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই বিমানে কিছু সমস্যা আঁচ করেন তৌকির। কন্ট্রোল রুমে রিপোর্ট করে জানান যে তার বিমান আকাশে ভাসছে না, মনে হচ্ছে বিমান নিচের দিকে পড়ে যাচ্ছে। কন্ট্রোল রুম থেকে ইন্সট্যান্ট রেসপন্স করে ইজেক্ট করার জন্য জানানো হয়। ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির শেষ মুহূর্ত অব্দি চেষ্টা করেছেন বিমান বাঁচানোর জন্য। তিনি বিমানটির সর্বোচ্চ ম্যাক স্পিড তুলে বেসের দিকে ছুটতে থাকেন। এর মধ্যেই কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে পাইলটের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তার ঠিক এক থেকে দেড় মিনিটের মধ্যেই বিমানটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উত্তরা মাইলস্টোন স্কুলে বিধ্বস্ত হয়।এর আগে সোমবার দুপুর ১টা ১৮ মিনিটের দিকে উত্তরার দিয়াবাড়ীর মাইলস্টোন স্কুল ও কলেজ ক্যাম্পাসে বিমান বাহিনীর এফ-7 বিজেআই মডেলের প্রশিক্ষণ বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। আছড়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিমানটিতে আগুন ধরে যায়।দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৯ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়াও দুর্ঘটনার পর ইতোমধ্যে ৭০ জনকে উদ্ধার করে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে নেয়া হয়েছে। হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্তরা জানিয়েছেন, দগ্ধদের বেশিরভাগই শিক্ষার্থী।

Countdown Timer

Post a Comment

Previous Post Next Post