ইসলামে কিছু নির্দিষ্ট ধরনের যৌন মিলন কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। এই নিষেধাজ্ঞাগুলো কোরআন ও হাদিসের আলোকে নির্ধারিত হয়েছে এবং এর মূল উদ্দেশ্য হলো নৈতিকতা, পবিত্রতা ও পারিবারিক বন্ধন রক্ষা করা। নিচে চারটি প্রধান নিষিদ্ধ বিষয় বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো:
১. বিবাহবহির্ভূত যৌন সম্পর্ক (যিনা)
যিনা বলতে বোঝানো হয় এমন যৌন মিলন যা বৈধ বিবাহ বন্ধন ছাড়া সংঘটিত হয়। এটি ইসলামে একটি গুরুতর অপরাধ এবং মহা পাপ হিসেবে গণ্য করা হয়। কোরআনে যিনাকে একটি "প্রকাশ্য অশ্লীলতা ও মন্দ পথ" হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। ইসলামে পারিবারিক জীবনের পবিত্রতা ও বংশধারার বিশুদ্ধতা রক্ষার জন্য এই ধরনের সম্পর্ক কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।
২. পায়ুপথে যৌন মিলন (যৌন অনাচার)
ইসলামে পায়ুপথে যৌন মিলন ( anal sex) কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। হাদিস অনুযায়ী, এটি একটি গুরুতর পাপ এবং এটি প্রকৃতি ও স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর। রসূলুল্লাহ (সা.) এই কাজকে তীব্রভাবে ঘৃণা করতেন এবং এর থেকে বিরত থাকার জন্য কঠোরভাবে নির্দেশ দিয়েছেন। এই ধরনের কাজ স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের মধ্যে স্বাভাবিকতা ও পবিত্রতা নষ্ট করে বলে বিবেচিত হয়।
৩. মাসিক ঋতুস্রাবের সময় যৌন মিলন (হায়েজ)
মাসিক ঋতুস্রাবের সময় (হায়েজ) যৌন মিলন ইসলামে নিষিদ্ধ। কোরআনে এই সময়কে "অশুদ্ধ" বা "কষ্টকর" হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে এবং এই সময়ে স্ত্রী থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর মূল কারণ হলো স্বাস্থ্যগত দিক, কারণ এই সময়ে যৌন মিলন স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে এবং এটি শরীরের জন্য কষ্টদায়কও বটে। এই সময় পার হলে এবং গোসল করার পর আবার স্বাভাবিকভাবে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করা বৈধ।
৪. সমকামিতা (লুত সম্প্রদায়ের মতো কাজ)
সমকামিতা (Homosexuality) ইসলামে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এটি লুত (আঃ) এর সম্প্রদায়ের পাপের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়, যাদেরকে এই কাজের জন্য আল্লাহ তা'আলা ধ্বংস করে দিয়েছিলেন। ইসলামে শুধুমাত্র বিপরীত লিঙ্গের (পুরুষ ও নারী) মধ্যে বিবাহ এবং যৌন মিলন বৈধ। সমকামিতাকে প্রকৃতি ও আল্লাহর বিধানের পরিপন্থী হিসেবে গণ্য করা হয়। এটি পারিবারিক কাঠামো এবং সমাজের নৈতিকতা নষ্ট করে বলে বিবেচিত হয়।
এই চারটি বিষয়ের মূল উদ্দেশ্য হলো মানব সমাজকে পাপাচার, ব্যাভিচার এবং অনৈতিক কার্যকলাপ থেকে রক্ষা করা এবং একটি সুস্থ ও পবিত্র জীবনধারা নিশ্চিত করা।
Post a Comment