
তবে, কিছু নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা সহবাস থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিতে পারেন। যেমন:
* যোনিপথে রক্তপাত বা স্পটিং: যদি গর্ভাবস্থায় কোনো কারণে যোনিপথে রক্তপাত হয়, তাহলে সহবাস এড়িয়ে চলা উচিত।
* আর্লি লেবার বা মিসক্যারেজের ঝুঁকি: যদি আপনার আগে আর্লি লেবার (৩৭ সপ্তাহের আগে প্রসব) বা বারবার গর্ভপাতের ইতিহাস থাকে, তাহলে ডাক্তার সহবাস থেকে বিরত থাকতে বলতে পারেন।
* জরায়ুমুখের দুর্বলতা (Cervical Incompetence): যদি জরায়ুমুখ নির্ধারিত সময়ের আগে খুলতে শুরু করে।
* প্লাসেন্টা প্রিভিয়া (Placenta Previa): যদি গর্ভফুল জরায়ুমুখকে আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে ঢেকে রাখে।
* পানি ভাঙা (Ruptured Membranes): যদি অ্যামনিওটিক ফ্লুইড লিক করে বা পানি ভেঙে যায়, তাহলে সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে, তাই সহবাস করা উচিত নয়।
* একাধিক গর্ভধারণ: যদি আপনি যমজ বা তার বেশি সন্তান ধারণ করে থাকেন, কিছু ক্ষেত্রে ডাক্তার সতর্কতা অবলম্বন করতে বলেন।
* যৌনবাহিত রোগ (STIs): যদি আপনার বা আপনার সঙ্গীর কোনো যৌনবাহিত রোগ থাকে, তাহলে কনডম ব্যবহার করা জরুরি।
গর্ভাবস্থার বিভিন্ন পর্যায়ে সহবাস:
* প্রথম ত্রৈমাসিক (০-১৩ সপ্তাহ): এই সময়ে ক্লান্তি, বমি বমি ভাব, স্তনে ব্যথা ইত্যাদি কারণে অনেক নারীর সহবাসের ইচ্ছা কমে যেতে পারে। তবে, চিকিৎসকদের মতে, জটিলতা না থাকলে এই সময়ে সহবাস নিরাপদ।
* দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক (১৪-২৬ সপ্তাহ): এই সময়ে গর্ভাবস্থা অনেকটাই স্থিতিশীল থাকে এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মায়েরা প্রথম ত্রৈমাসিকের সমস্যাগুলো থেকে মুক্তি পান। এই সময়টা সহবাসের জন্য সবচেয়ে আরামদায়ক হতে পারে।
* তৃতীয় ত্রৈমাসিক (২৭ সপ্তাহ থেকে জন্ম পর্যন্ত): এই সময়ে পেটের আকার অনেক বড় হয়ে যায়, তাই কিছু সহবাসের অবস্থান অস্বস্তিকর মনে হতে পারে। তবে, যদি কোনো জটিলতা না থাকে, তাহলে প্রসবের আগ পর্যন্ত সহবাস করা নিরাপদ। কিছু চিকিৎসক মনে করেন, শেষ দিকে সহবাস প্রসবকে উৎসাহিত করতে পারে, তবে বৈজ্ঞানিকভাবে এর কোনো নিশ্চিত প্রমাণ নেই।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, আপনার গর্ভাবস্থা যদি স্বাভাবিক থাকে এবং আপনার ডাক্তার যদি কোনো নিষেধ না করে থাকেন, তাহলে সহবাসে কোনো সমস্যা নেই। তবে, যদি আপনার কোনো অস্বস্তি বা উদ্বেগ থাকে, তাহলে অবশ্যই আপনার চিকিৎসকের সাথে কথা বলুন। তিনি আপনার স্বাস্থ্যের অবস্থা বিবেচনা করে সঠিক পরামর্শ দিতে পারবেন।
Post a Comment