শারীরিক মিলনের সময় যে ভুলগুলো করলে গর্ভধারণের সম্ভাবনা কমে যায়
শারীরিক মিলনের সময় কিছু বিষয় আছে যা গর্ভধারণের সম্ভাবনাকে কমিয়ে দিতে পারে। এখানে এমন কিছু ভুলের কথা আলোচনা করা হলো:
* ওভুলেশনের সময় সম্পর্কে অজ্ঞতা: একজন নারীর ডিম্বস্ফোটন বা ওভুলেশন (ovulation) কখন হয়, তা জানা গর্ভধারণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ডিম্বাণু সাধারণত ডিম্বস্ফোটনের পর ১২-২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত নিষিক্ত হওয়ার জন্য কার্যকর থাকে। শুক্রাণু নারীর প্রজননতন্ত্রে ৫ দিন পর্যন্তS পর্যন্তS বাঁচতে পারে। তাই, ডিম্বস্ফোটনের ঠিক আগে বা ডিম্বস্ফোটনের দিন শারীরিক মিলন করলে গর্ভধারণের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকে। ওভুলেশনের সময় সম্পর্কে ভুল ধারণা বা এই সময় ছাড়া অন্য সময়ে মিলন করলে গর্ভধারণের সম্ভাবনা কমে যায়।
* অনিয়মিত মাসিক চক্র: যাদের মাসিক চক্র (menstrual cycle) অনিয়মিত, তাদের ডিম্বস্ফোটনের সময় অনুমান করা কঠিন হয়ে পড়ে। ফলে, সঠিক সময়ে মিলন না হলে গর্ভধারণের সম্ভাবনা কমে যায়।
* গর্ভনিরোধক ব্যবহার: যদি গর্ভনিরোধক (contraceptives) যেমন, কনডম (condom), জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল (birth control pills), ইনজেকশন, আইইউডি (IUD) ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়, তবে গর্ভধারণের কোনো সম্ভাবনা থাকে না, যদি না পদ্ধতিটি ভুলভাবে ব্যবহৃত হয় বা ব্যর্থ হয়।
* মিলনের ফ্রিকোয়েন্সি: খুব কম বা খুব বেশি শারীরিক মিলনও গর্ভধারণের সম্ভাবনাকে প্রভাবিত করতে পারে। প্রতিদিন মিলন করলে শুক্রাণুর গুণগত মান কিছুটা কমে যেতে পারে। আবার, খুব কম মিলন করলে ডিম্বস্ফোটনের সঠিক সময়টি মিস হয়ে যেতে পারে। সাধারণত, ডিম্বস্ফোটনের সময়ের আশেপাশে একদিন পরপর মিলন করাকে সবচেয়ে কার্যকর বলে মনে করা হয়।
* লুব্রিকেন্টের ব্যবহার: কিছু ধরনের লুব্রিকেন্ট (lubricant) শুক্রাণুর কার্যকারিতা বা গতিশীলতাকে প্রভাবিত করতে পারে এবং নিষিক্তকরণের সম্ভাবনা কমিয়ে দিতে পারে। যদি লুব্রিকেন্ট ব্যবহারের প্রয়োজন হয়, তবে শুক্রাণুবান্ধব (sperm-friendly) লুব্রিকেন্ট ব্যবহার করা উচিত।
* স্বাস্থ্যগত সমস্যা: নারী বা পুরুষ উভয়েরই কিছু স্বাস্থ্যগত সমস্যা থাকতে পারে যা গর্ভধারণে বাধা দেয়। যেমন, নারীর পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম (PCOS), এন্ডোমেট্রিওসিস (endometriosis), ব্লকড ফ্যালোপিয়ান টিউব (blocked fallopian tubes) অথবা পুরুষের শুক্রাণুর সংখ্যা কম থাকা (low sperm count), শুক্রাণুর গতিশীলতা কম থাকা (poor sperm motility) ইত্যাদি। এসব ক্ষেত্রে স্বাভাবিক মিলন হলেও গর্ভধারণ কঠিন হতে পারে।
* অতিরিক্ত মানসিক চাপ: অতিরিক্ত মানসিক চাপ (stress) নারী ও পুরুষ উভয়েরই হরমোনের ভারসাম্যে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে, যা ডিম্বস্ফোটন এবং শুক্রাণু উৎপাদনকে প্রভাবিত করে গর্ভধারণের সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়।
* ধূমপান ও মদ্যপান: ধূমপান ও অতিরিক্ত মদ্যপান নারী ও পুরুষ উভয়েরই প্রজনন স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এটি শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর গুণগত মান হ্রাস করে এবং গর্ভধারণের সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়।
গর্ভধারণে
যদি আপনার আরও কোনো প্রশ্ন থাকে, জিজ্ঞাসা করতে পারেন।
Post a Comment