সহ/বাসে ১৫ টি ইসলামিক নিয়ম!

 

সহবাস বা দাম্পত্য জীবনে ইসলামিক নিয়মাবলী নিয়ে আপনার জিজ্ঞাসাটি স্পষ্ট নয়। আপনি যদি সহবাসের শারীরিক ও আত্মিক তৃপ্তি এবং বৈবাহিক সম্পর্ক সুদৃঢ়করণের ইসলামিক নির্দেশনা জানতে চেয়ে থাকেন, তবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিচে উল্লেখ করা হলো:
সহবাসের আগে ও পরের ইসলামিক আদব
ইসলামে সহবাসকে কেবল জৈবিক প্রয়োজন হিসেবে দেখা হয় না, বরং স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ভালোবাসা ও হৃদ্যতা বৃদ্ধির একটি মাধ্যম হিসেবেও বিবেচনা করা হয়। তাই সহবাসের ক্ষেত্রে কিছু নির্দিষ্ট আদব বা নিয়ম মেনে চলা উচিত:
১. পবিত্রতা অর্জন: সহবাসের আগে স্বামী-স্ত্রী উভয়েরই পবিত্রতা অর্জন করা উচিত, সম্ভব হলে ওযু বা গোসল করে নেওয়া ভালো।
২. দোয়া পড়া: সহবাসের আগে একটি নির্দিষ্ট দোয়া পাঠ করা মুস্তাহাব। এর মাধ্যমে শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে রক্ষা পাওয়া যায় এবং নেক সন্তান লাভের আশা করা যায়। দোয়াটি হলো:
بِسْمِ اللهِ، اَللَّهُمَّ جَنِّبْنَا الشَّيْطَانَ، وَجَنِّبِ الشَّيْطَانَ مَا رَزَقْتَنَا
উচ্চারণ: "বিসমিল্লাহি, আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ শাইতানা, ওয়া জান্নিবিশ শাইতানা মা রাযাকতানা।"
অর্থ: "আল্লাহর নামে শুরু করছি। হে আল্লাহ! আমাদেরকে শয়তান থেকে দূরে রাখুন এবং শয়তানকে তা থেকে দূরে রাখুন যা আপনি আমাদেরকে দান করবেন (অর্থাৎ সন্তান)।"
৩. গোপনীয়তা রক্ষা: সহবাসের বিষয়টি স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে একান্ত ব্যক্তিগত। এটি অন্যের কাছে প্রকাশ করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।
৪. ভূমিকা পালন: সহবাস শুরুর আগে একে অপরের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করা, যেমন - চুম্বন, আলিঙ্গন ইত্যাদির মাধ্যমে ভূমিকা পালন করা মুস্তাহাব। এটি পরস্পরের প্রতি আকর্ষণ বাড়ায়।
৫. যৌনক্রিয়ার প্রকৃতি: ইসলামে সহবাসের নির্দিষ্ট কোনো ভঙ্গি বা অবস্থান নির্ধারণ করে দেওয়া হয়নি। তবে এমন কোনো কাজ করা যাবে না যা শরিয়ত বিরোধী বা অস্বাস্থ্যকর। পায়ুপথে সহবাস ইসলামে সম্পূর্ণরূপে হারাম।
৬. স্ত্রীর সম্মতি: সহবাসের ক্ষেত্রে স্ত্রীর শারীরিক ও মানসিক সম্মতি গুরুত্বপূর্ণ। তাকে জোর করা যাবে না।
৭. পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতা: সহবাসের পর গোসল করে পবিত্র হওয়া ফরয (ফরয গোসল)। যতক্ষণ না গোসল করা হয়, ততক্ষণ নামাজ পড়া বা কুরআন স্পর্শ করা জায়েজ নয়।
৮. পরিচ্ছন্ন পোশাক: সহবাসের সময় পরিচ্ছন্ন পোশাক পরিধান করা উচিত।
৯. মুখোমুখি হওয়া: সম্ভব হলে একে অপরের মুখোমুখি হয়ে সহবাস করা মুস্তাহাব।
১০. অধিক কথা বলা থেকে বিরত থাকা: সহবাসের সময় বেশি কথা বলা বা অন্য কোনো দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত নয়।
১১. সন্তান ধারণের ইচ্ছা: সহবাসের মূল উদ্দেশ্যগুলোর মধ্যে একটি হলো নেক সন্তান লাভ করা। এই নিয়ত সহবাসকে ইবাদতে পরিণত করে।
১২. স্ত্রীর অধিকার: ইসলামে স্ত্রীর প্রতি স্বামীর কিছু অধিকার রয়েছে, যার মধ্যে যৌন চাহিদা পূরণ একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। স্বামী তার স্ত্রীর যৌন চাহিদা পূরণে সক্ষম হলে তা পূরণ করা তার দায়িত্ব।
১৩. শারীরিক ও মানসিক বিশ্রাম: সহবাসের পর শরীর ও মনের বিশ্রাম নেওয়া উচিত।
১৪. ক্ষতিকারক অভ্যাস থেকে বিরত থাকা: এমন কোনো কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে যা শারীরিক বা মানসিক ক্ষতি করে, বা সম্পর্কের মধ্যে তিক্ততা নিয়ে আসে।
১৫. সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা: দাম্পত্য জীবনের এই নেয়ামতের জন্য আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা উচিত।
যদি আপনার প্রশ্নটি ভিন্ন কিছু নিয়ে হয়ে থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আরও বিস্তারিতভাবে বলুন।

Countdown Timer

Post a Comment

Previous Post Next Post